বর্তমান সময়ে লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুনী অনলাইনে তাঁদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিমাসে একটি স্মার্ট ফিগার এর টাকা ইনকাম করছে।আপনি হয়ত শুনে থাকবেন যে আপনার বন্ধু সার্কেলেই কেউ চাকুরী অথবা পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে এক্সট্রা ইনকাম করছে।আপনিও হয়ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে আপনিও অনলাইনে কাজ শুরু করবেন,কিন্তু কি কাজ করবেন এই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।এই পর্যন্ত যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন।আজকে আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে জানবো।উল্লেখ্য,এই আর্টিকেলে শুধুমাত্র অনলাইনের সেরা ১০ টি কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।কোন কাজ কিভাবে করতে হবে সেই সম্পর্কে কোন প্রকার আলোচনা করা হবে না।এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কোন কাজ গুলো সেরা,কোন কাজ গুলো করলে আপনি সবচাইতে বেশী টাকা করতে পারবেন।তাহলে আর দেরি কেন?চলুন শুরু করা যাকঃ-
১/ অনলাইনে সার্ভে করে আয় (Income by Online Survey):
কোন প্রতিষ্ঠানের সফলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের সম্পর্কে তাদের টার্গেট ক্রেতা এবং সাধারণ মানুষেরা কি ধারনা পোষণ করে এটা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এর ফলে সেই প্রতিষ্ঠান তাদের করা ভুল গুলো শুধরে নিজেদের সফলতার পথ সুগম করতে পারে।সার্ভে এর মূল লক্ষ্যই হল কোন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বাজারে অবস্থান কেমন তা পরিস্কার করা।আর এই রকম জরিপ করার জন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান ভালো পরিমান অর্থ ব্যয় করে থাকে।আপনি চাইলে এই প্রতিষ্ঠান গুলোর সার্ভের কাজ করে অনলাইন থেকে ভালো পরিমান অর্থ আয় করতে পারেন।তবে সার্ভের কাজ করার জন্য সাবধান থাকা খুবই জরুরি,কেননা অনলাইনে হাতে গোনা কিছু সার্ভে ওয়েবসাইট আছে যারা কাজ করে নিয়ে পেমেন্ট করে আর বাঁকি গুলো আপনাকে পেমেন্ট করবে না অর্থাৎ স্কাম সাইট।
২/ ব্লগিং করে আয় (Earn Money by Blogging):
বর্তমানে ব্লগিং খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম অনলাইন থেকে আয় করার জন্য।এবং অনেকই ব্লগিং করে ভালো পরিমান অর্থ আয় করছে।ব্লগিং এর জন্য আপনার অবশ্যই একটি ভালমানের ওয়েবসাইট থাকতে হবে।এবং অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে ভালো মানের কন্টেন্ট (আর্টিকেল) থাকতে হবে।আপনার আর্টিকেল গুলো পড়ার জন্য যখন আপনার ব্লগের ভিসিটর আপনার ওয়েবসাইটে আসবে আপনি তখন আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন বসিয়ে ভালো পরিমান অর্থ আয় করতে পারবেন।আপনি যে বিষয়ে সবচাইতে ভালো জানেন সেই বিষয়ে আর্টিকেল লিখে ব্লগ তৈরি করা সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ।আপনার কন্টেন্ট ভালো হলে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স এবং এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ যে সাতটি কারনে আপনি নতুন ব্লগার হিসাবে ব্যর্থ হচ্ছেন
৩/ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে অনলাইনে আয় (Online Income Through Web Development):
বর্তমান সময় হল প্রযুক্তির,এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে একটি ওয়েবসাইট ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানের অস্থিত্ত কল্পনাও করা যায় না।আর কোন প্রতিষ্ঠান যখন তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তখন একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার কে দিয়ে তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করে নেয়।এবং এর বিনিময়ে তাঁরা ভালো পরিমানের অর্থ ওয়েব ডেভেলপারদের পে করে থাকে।আর এই কারনেই অনেকেই ওয়েব ডেভেলপার হিসাবে কাজ করছে।আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপার হিসাবে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ওয়েব ডেভেলপ শিখে এরপর কাজ শুরু করতে হবে।
৪/ ভার্চুয়াল সহকারীর কাজ করে অনলাইনে আয় (Earn Money Online by Working as a Virtual Assistant):
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তাদের অফিসিয়াল কাজের জন্য প্রায়ই সহকারীর প্রয়োজন হয়।আর এই প্রয়োজন হয়ত ২-৪ দিনের জন্য বিধায় তাঁরা তাদের অফিসে কোন কর্মচারী নিয়োগ না করে ভার্চুয়াল সহকারি নিয়োগ করে।আপনি যদি অফিসিয়াল কাজে এক্সপার্ট হন তাহলে এই কাজ আপনার জন্য একদম পারফেক্ট।
৫/ অনুবাদের কাজ করে অনলাইনে আয় (Online Income From Translation Work):
প্রতিদিন অনলাইনে বিভিন্ন রকম আর্টিকেল প্রকাশ হচ্ছে,আর এই সব আর্টিকেল সাড়া পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে অনুবাদের কাজ করা হয়।আপনার যদি একাধিক ভাষা জানা থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসে অনুবাদের কাজ করে প্রচুর অর্থ আয় করতে পারবেন।যেমন ধরাযাক আপনি খুব ভালো ইংলিশ জানেন এবং আপনি যেহেতু বাংলাদেশি সেহেতু আপনি খুব ভালো বাংলা জানবেন স্বাভাবিক।এখন মনে করুণ আমি আপনাকে হায়ার করলাম এই আর্টিকেলটি ইংলিশে অনুবাদ কর দেওয়ার জন্য,এবং এর বিনিময়ে আমি আপনাকে পে করব।এটাই হল একজন অনুবাদকের কাজ।
৬/ পণ্য বিক্রি করে অনলাইনে আয় (Earn Money Online by Selling Products):
আপনার নিজের যদি কোন পণ্য থাকে তাহলে আপনি তা অনলাইন প্লাটফরম ব্যাবহার করে খুব ভালো পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন।আবার আপনি নিজের পণ্য না থাকলেও আপনি অন্য কারও পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।এই ক্ষেত্রে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন এবং অন্য কারও পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে আয় করার উপায় কে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।
৭/ ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয় (Earnings by Publishing Videos On YouTube):
অনলাইনে আয় করার আরও একটি জনপ্রিয় উপায় হল গুগল এর ভিডিও দেখার ওয়েবসাইট ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়।ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভিডিও তৈরি করতে হবে।ভিডিও গুলো অবশ্যই শিক্ষণীয় এবং মজাদার হতে হবে।অন্য কারও ভিডিও কপি করে ইউটিউবে পাবলিশ করা যাবে না।আপনার ভিডিও এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেল ইউটিউব এর সকল শর্তাবলী পুরন করলে আপনি আপনার ভিডিও তে গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে বজ্ঞাপন দেখিয়ে ভালো পরিমান টাকা ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন।ভিডিও তৈরি করার জন্য আপনি ক্যামেরা অথবা কম্পিউটার এর স্ক্রিন রেকর্ডার ব্যাবহার করতে পারেন।
৮/ আর্টিকেল লিখে অনলাইন থেকে আয় (Online Income From Article Writing):
অনলাইনে যত রকম কাজ আছে এর মধ্য সবচাইতে বেশী চাহিদা হল আর্টিকেল রাইটিং এর।কারন আপনি অনলাইনে যে কোন বিজনেস পরিচালনা করতে যান না কেন আর্টিকেল (কন্টেন্ট) আপনার লাগবেই।আর্টিকেল ছাড়া যেন অনলাইনের কোন কিছুর অস্থিত্ত নাই।আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি তখন আমরা সুদর সুন্দর আর্টিকেল দিয়ে সেই ওয়েবসাইট সাজানো দেখি।এখানে কিন্তু সব আর্টিকেল সেই ওয়েবসাইট এর মালিক লিখে না।তাঁরা অনলাইনে বিভিন্ন রাইটার কে দিয়ে আর্টিকেল লিখে নিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে।আর আপনি চাইলেই সেসব ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন।আর্টিকেল রাইটিং এর কাজের জন্য অবশ্যই আপনাকে ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে জানতে হবে।
কিভাবে ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে হয় তা বিস্তারিত জানতে নিচের আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেনঃ
কন্টেন্ট রাইটিং এর খুঁটিনাটি-পর্ব-১ (কন্টেন্ট রাইটিং এর কিলার টিপস)
কন্টেন্ট রাইটিং এর খুঁটিনাটি-পর্ব-২ (কন্টেন্ট রাইটিং এর কিলার টিপস)
কন্টেন্ট রাইটিং এর খুঁটিনাটি-পর্ব-৩ (কন্টেন্ট রাইটিং এর কিলার টিপস)
৯/ ডাটা এন্ট্রির কাজ করে অনলাইনে আয় (Online Income by Doing Data Entry Job):
অনলাইনে যত প্রকার কাজ আছে তার মধ্য সবচাইতে সহজ কাজ হল ডাটা এন্ট্রি।ডাটা এন্ট্রির কাজে মূলত বিভিন্ন রকম তথ্য সংগ্রহ করে গ্রাহক এর দেওয়া ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হয়।যেমন কোন নির্দিষ্ট একটি এলাকার হাসপাতাল এর নাম,তাদের এড্রেস,তাদের ফোন নাম্বার,সেই হসপিটালে কোন কোন ডাক্তার রোগী দেখে তাদের বিস্তারিত তথ্য ইত্যাদি ইত্যাদি।ডাটা এন্ট্রির কাজে পারিশ্রমিক খুবই কম তবে যারা অনলাইনের কাজে একেবারে নতুন তাদের জন্য এই কাজ উপযুক্ত।
১০/ প্রশিক্ষণ প্রদান করে অনলাইনে আয় (Online Income by Providing Training):
আপনি যদি গৃহ শিক্ষক হিসাবে পূর্বে কাউকে পরিয়ে থাকেন তাহলে সি অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে পড়িয়ে ভালো পরিমান অর্থ আয় করতে পারেন।এর জন্য আপনাকে প্রথমে অনলাইনে শিক্ষাদান বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গুলোতে সাইন আপ করতে হবে।এর পর আপনি কোন কোন বিষয়ে পড়াতে চান তার একটা পূর্ণ তালিকা তৈরি করতে হবে।এবং এসব তথ্য দিয়ে সাইন আপ করা ওয়েবসাইট গুলোতে আপনার পার্সোনাল প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।এছারা আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনি আপনার স্টুডেন্টদের ক্লাস করাতে পারবেন(বর্তমান সময়ে যেভাবে অনলাইন ব্যাবহার করে ছাত্রদের ক্লাস নিউজ হচ্ছে)।
এই ছিল আজকের লেখার আলোচনার বিষয়।আপনি চাইলেই উপরে আলোচিত ১০ টি কাজের আপনার পছন্দের যেকোনো একটি ব্যাবহার করে খুব সহজেই অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।এই ১০ টি উপায় এর বাহিরে আপনার কোন কাজের ব্যাপারে জানা থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে তা মন্তব্য করে জানাবেন।
ডিসক্লেইমারঃ ইন্সটাবাংলাতে প্রকাশিত সকল আর্টিকেল সুধুমাত্র শিখানোর জন্য প্রকাশ করা হয়।আমাদের এই আর্টিকেল কোনভাবেই আপনাকে অনলাইন থেকে আয় করার গ্যারান্টি প্রদান করে না।এই আর্টিকেল পরে কেউ কোন প্রকার ভুল রাস্তায় নিজেকে পরিচালনা করলে সেই দায় সুধুই সেই ব্যাক্তির।ইন্সটাবাংলা কারও ব্যাক্তিগত ভুলের দায়ভার গ্রহন করবে না।
Leave a Reply