বর্তমান সময় বিজ্ঞান আমাদের কোথায় নিয়ে এসেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।বিজ্ঞান এর বিভন্ন আবিস্কার এর ফল আমরা প্রতিনিয়ত ভোগ করে চলেছি।আপনি যখন এই আর্টিকেল পড়ছেন তখনও আপনি বিজ্ঞানের তিনটি অবদান উপভোগ করছেন।অবদান তিনটি হলঃ মোবাইল/কম্পিউটার,এই লেখা যে ওয়েবসাইটে পড়ছেন সেই ওয়েবসাইট এবং বিজ্ঞানের যুগান্তকারী আবিস্কার ইন্টারনেট।তবে এসব কথা বলার জন্য আজকের এই লেখা নয়!তাহলে?আজকের এই লেখায় আমরা এমন কিছু বৈজ্ঞানিক আবিস্কার দেখব যে আবিস্কার গুলোকে আমরা এখন খুব উন্নত ভার্সনে দেখি।আমরা আজকে দেখব আসলেও বিজ্ঞানের এই আবিস্কার গুলো প্রথম অবস্থায় কেমন ছিল।
পৃথিবীর প্রথম মোটরসাইকেলঃ মোটর সাইকেল আমাদের অনেক পরিচিত একটি বাহন।মোটর সাইকেল বর্তমানে যুবক সম্প্রাদয় এর কাছে ফ্যাশন ও বটে।১৮৮৫ সালে র্মানির ব্যাড ক্যান্সটাট শহরের বিজ্ঞানী গটলিব ডিমলার ও উইলহেলম মেব্যাচ পৃথিবীর প্রথম মোটরসাইকেল আবিস্কার তথা তৈরি করেন।১৮৮৫ সালে তৈরি করা এই মোটরসাইকেল দেখলে আপনার একে মোটরসাইকেল হিসাবে মেনেনিতে কষ্টও হতে পারে।আপনি বলেতেও পারেন আরে এখানে মোটরসাইকেল কোথায়?এটা ত আসত একটা ইঞ্জিন চালিত বাইসাইকেল।নিচের ছবিতে দেখে নিন পৃথিবীর প্রথম মোটরসাইকেল কেমন ছিল।
পৃথিবীর প্রথম এক্স-রে মেশিনঃ ১৮৯৫ সালের ২২ ডিসেম্বর ফটোগ্রাফিক প্লেটে সদ্য উদ্ভাবিত অজানা আলো, এক্স-রের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন পদার্থ বিজ্ঞানী ভিলহেলম কনরাড রন্টগেন।তাঁর স্ত্রী আনা বার্থা সে সময় সেখানে চলে আসেন,বিজ্ঞানী ভিলহেলম কনরাড রন্টগেনও সেখানে কারও উপস্থিথি আশা করছিলেন।তিনি দেখতে চাইছিলেন অজানা রশ্মি যার ভেদন ক্ষমতা আছে তা মানব দেহকে ভেদ করে ফটোগ্রাফিক প্লেটে কি ধরনের পতিক্রিয়া দেখায়।তার স্ত্রী সেখানে আসলে পদার্থ বিজ্ঞানী ভিলহেলম কনরাড রন্টগেন তার স্ত্রীকে ফটোগ্রাফিক প্লেটের উপর হাত রাখতে বলে।এরপর বিজ্ঞানী রন্টগেন তড়িৎক্ষরণ নল থেকে ক্যাথোড রশ্মি তার স্ত্রীর হাতের উপর ফেলেন।ক্যাথোড রশ্মি তাঁর স্ত্রীর হাতকে ভেদ করে ফতগ্রাফিক প্লেটের উপর প্রতিক্রিয়া রেখে যায়।এটিই ছিল পৃথিবীর প্রথম এক্স-রে ফ্লিম এবং এক্স-রে মেশিন।পৃথিবীর প্রথম এক্স-রে মেশিন এর ছবি দেখে নিন নিচের ছবি থেকে।
পৃথিবীর প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরাঃ ডিসেম্বর ১৯৭৫ সাল,ফটোগ্রাফিক প্রোডাক্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কোডাক এর ইঞ্জিনিয়ার স্টিভ স্যাসন ডিজিটাল ক্যামেরা আবিস্কার করেন।এই ক্যামেরাটি ১০০X১০০ রেজ্যুলেশন বা ০.০১ মেগাপিক্সেল সাইজ এর সাদাকালো ছবি তুলতে পারত।নিচের ছবি থেকে দেখে নিন পৃথিবীর প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা এর ছবি।
পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইটঃ আপনি এই লেখাটি একটি ওয়েবসাইটে পড়ছেন।ওয়েবসাইটটি দেখতে অনেক সুন্দর তাই না?কিন্তু আপনি যদি পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইট দেখেন তাহলে সেটাকে আপনার ওয়েবসাইট বলে মেনে নিতে কষ্ট হতে পারে।পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইট দেখতে এই লিংকে যান।আর নিচের ছবি থেকে দেখে নিন পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইট এর ছবি।
পৃথিবীর প্রথম এমপি থ্রি প্লেয়ারঃ ১৯৯৭ সালে,সিহান ইনফরমেশন সিস্টেমস (দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান) সর্বপ্রথম এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার আবিস্কার করে।দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে ১৯৯৮ সালে “এমপিম্যান” নামে এই এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার বাজারজাতকরা হয়।এই এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার এর মেমোরি ছিল মাত্র ৩২ মেগাবাইট এবং এটাতে মাত্র ৬ টি জ্ঞান রাখা যেত,তবে তারা ৬৪ মেগাবাইট এরও একটি এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার এর মডেল বাজারে এনেছিল।নিচের ছবিতে দেখেনিন পৃথিবীর প্রথম এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার।
পৃথিবীর প্রথম অ্যালবাম কভারঃ আজকে থেকে ঠিক ৮২ বছর আগে যখন কোন মিউজিক অ্যালবাম প্রকাশ হত,তখন সেই মিউজিক অ্যালবাম কে ব্রাউন পেপার দিয়ে বানানো প্যাকেটে বাজারজাত করা হত।কিন্তু ১৯৩৮ এই পদ্ধতিতে পরিবতন আনেন মার্কিন গ্রাফিক ডিজাইনার অ্যালেক্স স্টেইনউইজ।রজার ও হার্টস নামের দুই শিল্পীর যৌথ মিউজিক রেকর্ডটির অ্যালবাম কভার বানান তিনি।আর এটিই ছিল কোন মিউজিক অ্যালবাম এর প্রথম কভার।দেখে নিন নিচের ছবিতে।
পৃথিবীর প্রথম/পুরনো ছবিঃ শেষ করব পৃথিবীর সবচেয়ে প্রথম/পুরনো ছবি দিয়ে,১৮২৬ সালে এই ছবি তোলা হয়,”‘লা গ্রাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে” নামেই এই ছবি পরিচিত।ফ্রান্সের উদ্ভাবক ও ফটোগ্রাফার নিসেফঁরি নাইপি ফ্রান্সের সেইন্ট লুপ ডি ভেরেনাসের লা গ্রাস কাউন্টি স্টেটে বসে ছবিটি তুলেন।অবসকিউর ফোকাস ক্যামেরা ব্যবহার করে ফটোগ্রাফার নাইপি।সেই সময় এখনকার মত সুইচ টিপলেই ছবি উঠে যেত না!একটা ছবি তুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যেত।পৃথিবীর সব চাইতে পুরনো তথা প্রথম ছবি তুলতে সময় লেগেছিল মাত্র আট ঘণ্টা!নিচের ছবিতে থেকে দেখে নিন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রথম/পুরনো ছবি।
আমাদের আজকের আয়োজন আপনাদের কেমন লাগল তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।আপনাদের কমেন্ট পেলে পরবর্তী লেখা লিখতে উৎসাহ পাব।ধন্যবাদ।
Leave a Reply