বিয়ের দেন মোহর ৩১৩ জন রোগীর বিনামূল্যে সার্জারী

ইন্সটাবাংলা ফিচারঃ সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস হলো কারো পাতে উপচে পড়া খাবার। আর এই উপচে পড়া খাবারের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয় বড়লোকদের বিয়ের পার্টিতে। মাওলানা রুমি বলেছিলেন- যে রান্নাঘরের টুংটাং আওয়াজ দরিদ্রের কানে যায়। কিন্ত খাবার তার পেটে যায়না- এরচেয়ে যন্ত্রনাদায়ক বাজনা পৃথিবীতে আর নেই।

ইরানের এই নব দম্পত্তি ডাঃ এরকম অগণিত বুভুক্ষু মানুষ দেখেছেন। দেখেছেন- অর্থের অভাবে চিকিৎসাহীন অসংখ্য মৃতপথযাত্রী রোগী। একই সাথে দেখেছেন একেকটি বিয়ের পার্টিতে একেকদিনে কোটি কোটি রিয়েলের অপচয়।

বিয়ের আগে ডাঃ আফিফা ছোট একটা হিসাব করে দেখেন- দামী পোষাক, লাল কার্পেট, পার্টি সেন্টার, নানা বিলাসজাত সুগন্ধী, পার্লার, জড়োয়া, প্রতি পাতে পাতে বিয়ের নিমন্ত্রিত অতিথিদের উপচে পড়া খাবার -যাদের জীবনে খাবারের কোনো অভাব নেই- এর সাথে বিয়ের মোহরানা মিলে যে অর্থ সাশ্রয় হবে- তাতে কমপক্ষে ৩১৩ জন রোগীর সার্জারী করা যাবে। আর মোহরানা হলো একজন নারীর জীবনে সিকিউরিটি অর্থ। তিনি নিজেই যেহেতু একজন ডাক্তার তাই স্বামীর কাছ থেকে তাঁর আর্থিক কোনো সিকিউরিটি নেয়ার দরকারই বা কি। আর মহানবী সাঃ তো বলেছেন- যে বিয়েতে খরচ যত কম, সেই বিয়েতে আল্লাহর রহমত তত বেশী।

যে জীবন যত বেশি সাধারণ, সহজ, সরল। সে জীবন তত সুন্দর।ডাঃ আফিফা আর ডাঃ মেহরান এই সহজ, সরল সুন্দর জীবন আর রহমতের পথটিই বেছে নিয়েছেন।ডাঃ আফিফা, মায়ের সাথে পরামর্শ করে তার সদ্য হতে যাওয়া স্বামীকে বললেন- তার মোহরানা হলো– অর্থাভাবে যাদের সুচিকিৎসা হচ্ছেনা এরকম ৩১৩ জন রোগীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে বিনামূল্যে সার্জারী।

ডাঃ আফিফা আর ডাঃ মেহরান দম্পত্তি হয়তো পুরো দেশের অভাব মুছে দিতে পারবেনা, পুরো দেশের মানুষের সুচিকিৎসার গ্যারান্টি দিতে পারবেনা। তবে, তাঁর ছোট এই হিসাব হয়তো ৩১৩ জন রোগীকে নতুন জীবন দিবে।নতুন জীবন ফিরে পাওয়া এইসর রোগীদের নিঃশ্বাসে তাদের গৃহ আল্লাহর রহমত আর বরকতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠবে। তাঁদের এই কাজ-অন্য মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।ডাঃ আফিফা আর ডাঃ মেহরান এই আলোকিত মানুষ দুটির জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *