এই মুহূর্তে যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয় পৃথিবীর জনপ্রিয় ১০ টি সোশ্যাল ওয়েবসাইট এর নাম বলুন।তাহলে হয়ত আপনি ফেসবুক এর নাম দিয়ে ই আপনার উত্তর বলা শুরু করবেন।আর এই ফেসবুককে ঘিরেই বর্তমানে হাজার কোটি টাকার বিজনেস গড়ে উঠেছে।আর ফেসবুককে কেন্দ্র করে ব্যাবসা শুরু করতে চাইলে ফেসবুক পেজের বিকল্প কিছু নেই।আজকে আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানবো কিভাবে আমরা আমাদের ফেসবুক বিজনেস পেজে লাইক বাড়াতে পারি তার কিছু সহজ পদ্ধতি।যারা নতুন বিজনেস শুরু করেছেন এখনও ফেসবুক পেজে লাইক বাড়তে পারেন নি ততটা,যতটা আপনি আশা করেছিলেন।আজকের এই আর্টিকেল তাঁদের জন্য অনেক উপকারি হবে,তাহলে চলুন শুরু করা যাকঃ-
১/ পেজে ছবি পোস্ট করাঃ(Post Pictures on The Page): আপনি হয়ত আপনার পেজে টেক্সট আকারে পোস্ট করে থাকেন।আপনি জানেন কি টেক্সট পোস্ট এর চাইতে ইমেজ পোস্টে ফেসবুক বেশী রিচ দেয়!তাই চেষ্টা করুন আপনার সব পোস্ট এর সাথে একটা পোস্ট সম্পর্কিত ইমেজ অ্যাড করার।
২/ ইন্টারেস্টিং পোস্ট করুনঃ(Interesting Post): আপনার সাথে কি এমনটা প্রায় ই ঘটে,যে কেউ আপনার পেজে লাইক দিচ্ছে আবার কয়েক দিন পর ডিসলাইক করে দিচ্ছে?ঠিক এমনটা জসি আপনার সাথে ঘটেই থাকে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার পেজে যারা লাইক দিয়েছে তাঁরা যেমন পোস্ট পছন্দ করে আপনি সেই রকম পোস্ট আপনার পেজে পাবলিশ করছেন না।আর একারনেই তাঁরা আপনার পেজকে ডিসলাইক করে দিচ্ছে।সুতরাং আপনাকে অবশ্যই আপনার Audience পছন্দ করে এমন পোস্ট পাবলিশ করতে হবে।
৩/ ফেসবুক লাইক বক্সঃ(Facebook Like Box): আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনার উচিত হবে ওয়েবসাইট এর যেকোনো জায়গায় ফেসবুক লাইক বক্স অ্যাড করা।কেননা আপনার রিডার যখন আপনার ওয়েবসাইট ভিসিট করবে তখন সে এই লাইক বক্স থেকে আপনার ফেসবুক পেজে লাইক দিতে পারবে।
৪/ অন্য পেজে অংশগ্রহনঃ(Participate on Another Page): আপনার পেজের ক্যাটেগরি এর সাথে মিলে এমন পেজে যুক্ত হয়ে তাঁদের সাথে আলোচনায় অংশগ্রহন করতে হবে।সেসব পেজে সরাসরি আপনার পার্সোনাল প্রোফাইল থেকে মন্তব্য না করে আপনার বিজনেস পেজ থেকে মন্তব্য করুন এবং সকল প্রকার স্পাম এরিয়ে চলুন।স্পাম বলতে আমার/আমাদের পেজে লাইক দিন,আমাদের পেজে লাইক দিলে এটা পাবে সেইটা পাবেন ইত্যাদি ইত্যাদি কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।গঠনমূলক মন্তব্য করলে এমনিতেই মানুষ আপনার পেজ ভিসিট করবে এবং তাঁদের পছন্দ হলে লাইক দিবে।
৫/ কন্টেস্ট এর আয়োজনঃ(Organizing The Contest): আপনার পেজে লাইক বাড়াতে আপনি নিয়মিত কন্টেস্ট এর আয়োজন করতে পারেন।অর্থাৎ,এমন কিছু প্রতিযোগিতার আয়োজন করুন যেন সেই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আপনার পেজের পোস্ট সবাই শেয়ার করে।এই শেয়ার করার ফলে আপনি আপনার পেজে কিছু অরগানিক লাইক পেয়ে যাবেন।কন্টেস্ট এর আয়োজন মানেই যে আপনাকে অনেক বড় কিছু গিফট করতে হবে এমন কিছু না।আপনার সামর্থ্য অনুসারে কন্টেস্ট এর আয়োজন করবেন।
৬/ অ্যালবাম আকারে ছবি পোস্ট করাঃ(Posting Pictures as Album): পেজে ইমেজ পোস্ট করার সময় শুধু মাত্র একটি সিঙ্গেল ছবি পোস্ট না করে অনেকগুলো ছবি অ্যালবাম আকারে পোস্ট করুন।কারন জরিপে দেখা গেছে সিঙ্গেল ছবির চাইতে অ্যালবাম এর ছবি ভালো ফলাফল দেয়।
৭/ নন প্রমোশনাল পোস্ট বেশী করতে হবেঃ(Non-Promotional Posts Need to do More): বিক্রয় অথবা প্রমোশনাল পোস্ট কমিয়ে দিয়ে নন প্রমোশনাল পোস্ট বেশী করতে হবে।কারন দেখা গেছে প্রমোশনাল পোস্ট এর চাইতে নন প্রমোশনাল পোস্ট বেশী উপকারী।ফেসবুক পেজ এক্সপার্টরা ৮০% এবং ২০% রেশিও ফলো করার উপদেশ দেন।অর্থাৎ,৮০% হবে নন প্রমোশনাল পোস্ট এবং ২০% হবে প্রমোশনাল পোস্ট।
৮/ ফেসবুক প্রোফাইলে পেজের লিংকঃ(Add Facebook Page Link In Your Personal Profile): আপনাকে অবশ্যই আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের লিংক আপনার ব্যাক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল এর এবাউট সেকশনে অ্যাড করতে হবে।এতে করে আপনার বন্ধু তালিকা থেকেও কিছু লাইক আপনি ফ্রীতে পেয়ে যাবেন।
৯/ ছোট পোস্ট এবং আকর্ষণীয়ঃ(Short Post but Interesting): ফেসবুক পেজে সর্বদা ছোট কিন্তু আকর্ষণীয় এমন পোস্ট পাবলিশ করা উচিত।আপনার পোস্ট সর্বদা ১০০-১১৯ শব্দের ভেতর রাখার চেষ্টা করবেন।কারন ১০০-১১৯ শব্দের পোস্টে ফেসবুক বেশী রিচ দিয়ে থাকে।
১০/ বিক্রয় পোস্টে ডিস্কাউন্ট অফারঃ(Discount Offer on Sell Post): এক জরিপে দেখা গেছে যারা ফেসবুক থেকে বিভিন্নরকম পণ্য কিনে তাঁরা ডিস্কাউন্ট এবং অফার পছন্দ করে।এই রকম মানুষের সংখ্যা ৪২%।সুতরাং আপনি যখন আপনার পেজে বিক্রয় পোস্ট করবেন তখন আপনার উচিত হবে বাজার মূল্য থেকে অল্প পরিমান হলেও ডিস্কাউন্ট এবং অফার দিয়ে পোস্ট করা।
১১/ ব্যাক্তিগত বিষয় শেয়ারঃ(Share Personal Matters): যতটুকু সম্ভব পেজে আপনার ব্যাক্তিগত বিষয়াদি শেয়ার করবেন।যেমন আপনি কোথাও ভ্রমন করতে গিয়ে কিছু ছবি তুললেন,সেই ছবি থেকে সেরা কিছু ছবি আপনার পেজে শেয়ার করুন,প্রতিটা ছবির পিছনের গল্পও ছবির সাথে শেয়ার করুন।কারন মানুষ শুধু আপনার বিজনেসকে না তাঁরা আপনার সম্পর্কেও জানতে চায়।
১২/ নির্দিষ্ট সময়ে পোস্ট পাবলিশঃ(Publish The Post at The Specified Time): আপনার ফেসবুক পেজ কে উন্নত করতে চাইলে আপনার অবশ্যই প্রতিদিন আপনার পেজের ইনসাইট চেক করা উচিত।আপনাকে এখানে দেখতে হবে,কোন সময় পোস্ট দিলে আপনার পোস্ট বেশী রিচ হচ্ছে,কোন ধরনের পোস্ট পাবলিক ভালোভাবে গ্রহন করছে এবং কোন পোস্ট গ্রহন করছে না।ইনসাইট রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
১৩/ অ্যাড টার্গেট সঠিকভাবে করাঃ(Ads Target Correctly): আপনি যদি ফেসবুকে প্রোমোশন এর মাধ্যমে আপনার কোন পণ্য বিক্রয় করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সঠিকভাবে অ্যাড টার্গেট করতে হবে।এক্ষেত্রে আপনি একটা কাজ করতে পারেন,যারা আপনার পেজে লাইক দিয়ে রেখেছে তাঁদেরকে টার্গেট করেই আপনি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।এতে করে আপনার সেল হবার সম্ভবনা বেড়ে যাবে।
১৪/ পেজের নামের সাথে মিলে রেখে গ্রুপ খোলাঃ(Open The Group To Match The Name of The Page): পেজের নামের সাথে মিল রেখে একটা গ্রুপ ওপেন করে ফেলুন, সেখানে বিভিন্ন রকম পোস্ট করা শুরু করে দিন, শুধু বিক্রয় পোস্ট দিবেন না, বিক্রয় পোস্ট প্রথমে প্রথম না দেওয়া ই ভালো।তাহলে এখন প্রশ্ন হল কেমন পোস্ট দিব?এর সহজ উত্তর হলঃ আপনার প্রোডাক্ট যদি হয় মেয়েদের ড্রেস তাহলে আপনার উচিত হবে মেয়েদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতা মুলক পোস্ট দেওয়া, রূপচর্চা বিষয়ক পোস্ট দেওয়া, প্রশ্ন উত্তর পর্বও চালু করতে পারেন চাইলে,এখন পেজকে গ্রুপের সাথে লিঙ্ক করে দিতে হব।দেখবেন এভাবে ও অনেক লাইক আপনার পেজে চলে আসবে আসবে।
১৫/ পোস্ট করার সময় অন্য পেজকে ট্যাগ করাঃ(Tagged On Another Page When Posting): আপনার পোস্ট এ অন্য পেজকে ট্যাগ করেন এতে সম্ভাবনা থাকে যে তাদের পেজে আপনার পোস্ট দেখা যাবে এবং সেই পেজের যারা লাইক দিয়েছে তারা আপনার পেজে ও লাইক দিবে।
১৬/ এমন পোস্ট করবেন যেন মানুষ কমেন্ট করেঃ(Make Some Post People Interest To Made Comment): এমন কিছু পোস্ট দেন যেগুলিতে কমেন্ট আসবে অনেক যেমন আপনার প্রিয় কোনটা, দুইটা ছবি দিলেন সেখান থেকে কমেন্ট করেন, জানতে চাইতে পারেন কে কোথায় থাকে, কার জন্মদিন কবে, কোন প্রোডাক্ট আনলে ভালো হত, আগের প্রোডাক্ট কেমন ছিলো এই ধরনের পোস্ট বেশি বেশি ফেসবুক এর পেজে দেন, ফেসবুক যখন দেখে একটা পেজে অনেক কমেন্ট, শেয়ার আসছে তখন পোস্টটাকে প্রমোট করে।
১৭/ ভিডিও পাবলিশ করাঃ(Published Some Videos): এখন ভিডিও তে অনেক বেশি রিচড হয় তাই বিভিন্ন ভিডিও পোস্ট করতে পারেন, ভিডিও বুস্ট ও করতে পারেন, ভিডিও অ্যাড এর দাম অনেক কম ফেসবুকে।
১৮/ পার্টনারশিপ এর চেষ্টা করাঃ(Trying The Partnership): জনপ্রিয় পেজে ম্যাসেজ দিয়ে পেজের মালিকের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন পার্টনারশিপ এর মত কাজ করা যায় কিনা, যেমন আপনি তার পোস্ট আপনার পেজে দিবেন, সে আপনার পোস্ট তার পোস্টে দিবে, সে ক্ষেত্রে অনেক বর পেজ হয়তো এরকম কিছুতে রাজি হবে না, তাই ছোট ছোট পেজের সাথে কথা বলাই ভালো তবে আপনার বিসয় সম্পর্কিত পোস্ট হতে হবে।
ত বন্ধুরা কেমন হল আজকের আর্টিকেল তা অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিবেন।আপনারা চুপ করে পড়ে চলে গেলে পড়ের লেখা লিখতে তেমন উৎসাহ পাওয়া যায় না।আপনাদের মন্তব্য আমার ভুল গুলো ধরার একমাত্র উপায়।
Leave a Reply