আমরা যারা অনলাইনে কেনাকাটা করি এবং যারা অনলাইনে কাজ করি তাদের জন্য ইস্টার্ন ব্যাংক একটি কার্ড নিয়ে এসেছে যা,ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নামে পরিচিত।ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডটি মূলত একটি ডাবল কারেন্সি কার্ড কেননা আপনি এই কার্ডে টাকা এবং ডলার দুই ধরনের কারেন্সি রাখার সুবিধা পাবেন।আপনি ইবিএল এর যেকোনো শাখা হতে অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নিতে পারবেন।
কেন আমরা ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড ব্যাবহার করব?
- আমরা চাইলেই ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডে দুই ধরনের কারেন্সি রাখতে পারব,তবে এখানে উল্লেখ্য যে ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করতে চাইলে পাসপোর্ট এন্ড্রোসমেন্ট করতে হবে
- ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড এর ফি অনেক কম!তিন বছরের জন্য ফি মাত্র ৫৭৫ টাকা ভ্যাট সহ
- ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড ব্যাবহার করে আপনি যত ছোট পরিমান লেনদেন করেন না কেন,আপনি প্রতিটি লেনদেন এর এসএমএস এলার্ট আপনার মোবাইলে পেয়ে যাবেন
- ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড যেহেতু একটি ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড,সেহেতু দেশের বাহিরে ভ্রমনে গেল আপনি এই কার্ড দিয়ে যেকোনো শপিং করতে পারবেন,এছারাও আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি তারা চাইলেই এই মাস্টার কার্ড ব্যাবহার করে ডোমেইন,সার্ভার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় টুলস ক্রয় করতে পারব
- অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডে ডলার লোড এর জন্য কোন অতিরিক্ত ফি নাই
- বিশ্বব্যাপী যেকোন মাস্টারকার্ড চিহ্নিত এটিএম বুথ থেকে আপনি এই কার্ড ব্যাবহার করে আপনার টাকা ক্যাশ করতে পারবেন
- বিশেষ করে যারা ভ্রমন করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড খুবই ভালো
ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নেওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন?
- সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ এর রঙিন ছবি
- এনআইডি/আইডি কার্ড এর ফটোকপি
- ইউএসডি কারেন্সি ব্যাবহার করার জন্য আপনার পাসপোর্ট,কারন পাসপোর্ট ছাড়া আপনি ডলার এন্ড্রোসমেন্ট করতে পারবেন না।
- ৫৭৫ টাকা তিন বছরের ফি
ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড পাওয়ার প্রসেসঃ
উপরের উল্লেখিত ডকুমেন্টস সহ ইবিএল এর যেকোনো শাখায় যেতে হবে।ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নেওয়ার প্রসেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চালু করার মতই।শুধু আপনাকে বলতে হবে যে আপনি এই কার্ডটি ইন্টারন্যাশনাল লেনদেনে ব্যাবহার করতে চান।এবং ই কমার্স লেনদেন করতে চান।তাহলে ব্যাংক থেকে আপনাকে কার্ডটি সেই অনুসারে একটিভ করে দেওয়া হবে।ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করতে চাইলে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট সাথে নিবেন(পাসপোর্ট ছারাও এই কার্ড আপনি নিতে পারবেন তবে ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করতে পারবেন না)।
যেকোনো মাস্টার কার্ড/ক্রেডিট কার্ড ব্যাবহারে নিচের সতর্কতা মেনে চলুনঃ
- আপনার কার্ড এর পিন নাম্বার সর্বদা মনে রাখুন,পিন নাম্বার কাউকে বলবেন না,পিন নাম্বার কোথাও লিখে রাখবেন না,
- কেউ ফোন করে ব্যাংক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে আপনার কার্ড এর পিন নাম্বার জানতে চাইলে বলবেন না,কারন ব্যাংক কখনও এসব তথ্য আপনার কাছে জানতে চাইবে না।তাদের একান্তও প্রয়োজন হলে আপনাকে আপনার নিকটতম ব্যাংক এর শাখায় সশরীরে উপস্থিত হতে বলবে
- শুধু মাত্র Trusted ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোন ওয়েবসাইটে আপনার কার্ড ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন
- যেসব সাইট এর এসএসএল নেই সেসব সাইটে আপনার কার্ড ব্যাবহার করবেন না,এসএসএল বলতে http:// এবং https:// হয়েছে,যেসব সাইটে আপনি https:// দেখবেন আপনার কার্ড শুধু সেসব সাইট এই ব্যাবহার করবেন।(এসএসএল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখান থেকে)
ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড সম্পর্কে কিছু প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্নঃ ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড এর বাৎসরিক চার্জ কত?
উত্তরঃ ইবিএল মাস্টার কার্ড এর জন্য কোন বাৎসরিক চার্জ নাই,আপনি প্রথমে যখন কার্ডটি নিবেন তখন তিন বছরের জন্য ৫৭৫ টাকা নেওয়া হবে,এছারা বাৎসরিক এসএমএস এলার্ট ফি ২০০ টাকা এর মত।
প্রশ্নঃ আমি যখন ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নিব তখন কি আমাকে কার্ড এর সাথে ইবিএল এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও দেওয়া হবে?
উত্তরঃ না আপনি কার্ড এর সাথে কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাবেন না।যেহেতু এটি সুধুমাত্র একটি কার্ড সার্ভিস।
প্রশ্নঃ আমার ত পাসপোর্ট নাই,তাহলে আমি ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করব কিভাবে?
উত্তরঃ আপনার পাসপোর্ট না থাকলে ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডে ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করতে পারবেন না,কারন ডলার ব্যাবহার এর জন্য পাসপোর্ট অ্যান্ড্রোসমেন্ট বাধ্যতামূলক।
প্রশ্নঃ আমার ত পাসপোর্ট নেই,আমি কি ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড নিতে পারব?
উত্তরঃ হ্যাঁ পারবেন,ডলার কারেন্সি ব্যাবহার করার জন্য পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক,কার্ড নেওয়ার জন্য নয়।
প্রশ্নঃ ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডে আমি কত ডলার লোড করতে পারব এবং কত ডলার খরচ করতে পারব?
উত্তরঃ আপনি প্রতি এক বছরে সার্কভুক্ত দেশের জন্য ৫,০০০ ডলার এবং নন-সার্কভূক্ত দেশের জন্য ৭,০০০ ডলার লোড এবং খরচ করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ আপনি এই লেখায় বার বার “অ্যান্ড্রাসমেন্ট” শব্দটা ব্যাবহার করেছেন,দয়া করে বলবেন কি অ্যান্ড্রাসমেন্ট আসলে কি?
উত্তরঃ অ্যান্ড্রাসমেন্ট এর মানে হল আপনার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাবহারের অনুমতি,যা ব্যাংক অফিসার আপনার পাসপোর্ট এর শেষ এর দিকে সিল মেরে অনুমোদন করে থাকে।
প্রশ্নঃ আমার ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড সম্পূর্ণ একটিভ হয়েছে আমি এখন ডলার লোড করব কিভাবে?
উত্তরঃ আপনি ইবিএল এর যেকোনো শাখায় যেয়ে বলবেন আপনি ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ডে ডলার লোড করতে চান,তারা আপনাকে একটা ফরম দিবে,আপনি উক্ত ফরমে আপনার কার্ড এর তথ্য এবং টাকার পরিমান লিখে জমা দিবেন,জমা দেওয়ার সময় অবশ্যই বলে দিবেন যে আপনি টাকা গুলো ডলার হিসাবে লোড করবেন।
প্রশ্নঃ আমি যখন কার্ডে ডলার লোড করে নিব,আমাকে প্রতি ডলার এর জন্য কত টাকা দিতে হবে?
উত্তরঃ ডলার রেট প্রতিদিন কম এবং বেশী হয়,আপনি তাদের ওয়েবসাইটে যেয়ে রেট জানতে পারবেন।ইবিএল ব্যাংক এর প্রতিদিনের ডলার রেট জানতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্নঃ এই কার্ড দিয়ে কি আমি ফেইসবুক,গুগল,অ্যামাজন,আলি বাবা এদের সার্ভিস ব্যাবহার করতে পারব?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই পারবেন।তবে এর জন্য আপনার কার্ডে ডলার অ্যান্ড্রোসমেন্ট ও ই-কমার্স এনরোলমেন্ট চালু থাকতে হবে।
প্রশ্নঃ আমি কিভাবে আমার কার্ড এর ব্যাল্যান্স চাক করব?
উত্তরঃ আপনার কার্ড এর ব্যাল্যান্স জানতে কাস্টমার কেয়ারে ফোন করতে হবে অথবা আপনি চাইলে ফেইসবুকে ইবিএল এর স্মার্ট এসিসটেন্ট ইবিএল ডিয়া (EBL DIA ) এর মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।
ইবিএল অ্যাকুয়া প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য ইবিএল এর ওয়েবসাইট ব্যাবহার করার পরামর্শ রইল।
Leave a Reply