ফেসবুক কি?এটা নিয়ে সম্ভবত নতুন করে কিছু বলার দরকার নাই,কারন বর্তমান সময়ে আমাদের সকলের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছেই।কিছু কিছু মানুষ ত ইন্টারনেট বলতে শুধু ফেসবুকেই বুঝে 😛 । ফেসবুক নাম্বার ওয়ান সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ওয়েবসাইট এবং খুব সহজেই ব্যাবহার যোগ্য হবার কারনে দিন দিন ফেসবুক এর ব্যাবহার বেড়েই চলেছে।তবে যারা নতুন ফেসবুক ব্যাবহার শুরু করেছে তাঁরা তাঁদের ফেসবুক আইডি তে নিরাপত্তা সেটিংস এর যথাযথ ব্যাবহার না করার কারনে অনেক সময় ই তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গুলোর আক্সেস অন্য কেউ নিয়ে ফেলে।আর আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর আক্সেস অন্য কেউ নিলে আপনি কি কি বিপদে পড়তে পারেন তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।আজকে আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানবো কিভাবে আমারা আমাদের ফেসবুক আইডি শক্তিশালী করতে পারি তাঁর কিছু প্রাথমিক টিপস।তাহলে চলুন শুরু করা যাকঃ-
আপনার নামঃ(Your Facebook Name):
আপনার ফেসবুক আইডি কতটা নিরাপদ তা অনেকটাই আপনার ফেসবুকে দেওয়া নামের উপর নির্ভর করে।আপনার ফেসবুক আইডি তে আপনি হয়ত এমন কোন নাম ব্যাবহার করছেন যা আপনার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করা নামের সাথে মিল নেই।যদি এই রকম করে থাকেন তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন আপনার ফেসবুক আইডি দুর্বল।আপনার আইডি শক্তিশালী করতে আপনার অরজিনাল নাম ব্যাবহার করুন,কখনই “এঞ্জেল ফারিয়া”, ” সেদিন দুজনে”, “রকস্টার বয় সিয়াম”, “নীল নীলাঞ্জনা” 😛 এই রকম নাম ব্যাবহার করবেন না।ফেসবুকে আপনার নাম লেখার সময় কখনই স্পেশাল ফন্ট বা স্পেশাল ক্যারেক্টার ব্যারহার করবেন না।সব সময় চেষ্টা করবেন পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করা নামের সাথে মিল রেখে ফেসবুক আইডি চালু করার।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ(Use Strong Passwords):
আপনার ফেসবুক আইডি শক্তিশালী করতে খুবই শক্তিশালী একটি পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করা উচিত,কারন সহজ পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করলে হ্যাকার খুব সহজেই আপনার পাসওয়ার্ডটি ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হবে।পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় বড় হাতের অক্ষর,ছোট হাতের অক্ষর,নাম্বার এবং চিহ্ন যুক্ত করে পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।যেমনঃ 9+aY#M*! শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার জন্য এই ওয়েবসাইটটি ব্যাবহার করতে পারেন।
পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় যে তথ্যগুলো ব্যাবহার করা যাবে নাঃ
১/ নিজের নাম পাসওয়ার্ড হিসাবে ব্যাবহার করা যাবে না
২/ আপনার জন্ম তারিখ পাসওয়ার্ড হিসাবে ব্যাবহার করা যাবে না
৩/ আপনার মোবাইল নাম্বার পাসওয়ার্ড হিসাবে ব্যাবহার করা যাবে না
মোবাইল নাম্বার এর সঠিক ব্যাবহারঃ(Proper Use of Mobile Numbers):
আপনি যদি ইমেইল ব্যাবহার না করে মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করে আপনার ফেসবুক আইডি খুলতে চান তাহলে অন্য কারও নামে এবং অন্য কারও এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যাবহার করে ফেসবুক আইডি চালু করা থেকে বিরত থাকুন।কেবল মাত্র আপনার নিজের অথবা আপনার খুবই নিকট কারও নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমের নাম্বার ব্যাবহার করে ফেসবুক আইডি চালু করুন।আর এক্সট্রা ঝামেলা এরাতে সেটিংস থেকে মোবাইল নাম্বার দেখার অপশনটি অনলি মি করে দিন।
আপনার ফেসবুক আইডি তে ইমেইল যোগ করুনঃ(Add Email To Your Facebook ID):
আপনি চাইলে শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার অথবা ইমেইল ব্যাবহার করেই ফেসবুক আইডি ব্যাবহার করতে পারবেন।তবে আপনি যদি মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করে ফেসবুক আইডি টি ওপেন করে থাকেন তাহলে আমি বলব আজই আপনার আইডি তে এক্সট্রা ইমেইল যোগ করুন।কারন আপনার আইডি তে ইমেইল যোগ করা থাকলে যদি কখনও আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েও যায় তাহলে আপনি আপনার ইমেইল ব্যাবহার করে আপনার আইডি রিকভার করতে পারবেন,ইমেইল অ্যাড না থাকলে সেসব আইডি রিকভার হবার সম্ভবনা খুবই কম।তবে কখনই অন্য কারও ইমেইল আপনার ফেসবুকে ব্যাবহার করবেন না,আপনার নিজের ইমেইল আইডি আপনার ফেসবুকে অ্যাড করে নিতে হবে।
আপনার অরজিনাল জন্ম তারিখ ব্যাবহার করুনঃ(Use Your Original Date of Birth):
ফেসবুক আইডি তে জন্ম তারিখ এর ব্যাবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।আপনার ফেসবুক আইডি সিকিউর রাখতে চাইলে আপনার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে প্রদত্ত জন্মতারিখ এর সাথে মিল রেখে জন্ম তারিখ দিতে হবে।এতে করে কেউ যদি কখনও আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েও যায় তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ফেসবুক আইডি রিকভার করতে পারবেন।আর যদি আপনার ফেসবুক আইডি তে দেওয়া জন্ম তারিখ আপনার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে প্রদত্ত জন্মতারিখ এর সাথে মিল না থাকে তাহলে আপনি কখনই আপনার আইডি রিকভার করতে পারবেন না।অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য সেটিংস থেকে আপনার জন্ম তারিখ অনলি মি করে দিন।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করাঃ(Introducing Two-Factor Authentication):
শুধু ফেসবুক নয় অনলাইনে যেকোনো ধরনের আইডি কে সর্বাধিক নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম।টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ভেরিফিকেশন এমন একটি সিস্টেম যেখানে আপনি লগিন করতে চাইবেন সেখানে সব তথ্য সঠিক দেওয়ার পরেও তাঁরা আপনার আরও একটি অতিরিক্ত ভেরিফিকেশন করবে,সেটি হল আপনি যে ফেসবুক আইডি অথবা অন্য কোন আইডি তে লগিন করতে চাইবেন সেই আইডি এর টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনে অ্যাড করা মোবাইল নাম্বারে তাঁরা একটি কোড সেন্ট করবে,আপনি যখন সেই কোড তাঁদের প্রভাইড করবেন তখন ই তাঁরা আপনাকে লগিন করার অনুমতি দিবে।টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সম্পর্কে আমার লেখা নিচের আর্টিকেল টি পড়তে পারেন।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সম্পর্কিত আর্টিকেলঃ টু স্টেপ ভেরিফিকেশন কীভাবে কাজ করে?কেন টু স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যাবহার করব?
এটি চালু করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরন করুনঃ
Facebook Settings → Security → Security and login → Two-Factor Authentication → Use Two-Factor Authentication → Text Message.
নোটঃ অব্যশই রিকোভারী কোড গুলো সংরক্ষণ করে রাখবেন।
ফেসবুক আইডি তে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট অ্যাড করাঃ(Adding Trusted Contact To Facebook ID):
আপনার ফেসবুক আইডি কে অতিরিক্ত নিরাপদ রাখতে আপনার খুব কাছে কয়েক জনের আইডি কে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে অ্যাড করে রাখুন।আপনার অ্যাকাউন্ট যেকোনো ভেরিফিকেশনে পড়লে আপনি ট্রাস্টেড কন্টাক্ট ব্যাবহার করে খুব সহজেই আপনার ফেসবুক আইডি কে রিকভার করে নিতে পারবেন।
থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ব্যাবহার না করাঃ(Do Not Use Third Party Apps and Websites):
ফেসবুক ব্যাবহার করে থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ব্যাবহার করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।আমরা ফেসবুকে যেসব গেমস খেলে থাকি তা সবই থার্ড পার্টি অ্যাপ,আবার অনেক সময় আমরা এমন কিছু ওয়েবসাইট ভিসিট করে থাকি যারা আপনার ফেসবুক আইডি ব্যাবহার করে তাঁদের ওয়েবসাইটে লগিন করার অনুমতি দেয়।আসলে আমরা যখন আমাদের ফেসবুক আইডি ব্যাবহার করে এসব ওয়েবসাইটে লগিন করি আমরা অজান্তেই আমাদের ফেসবুক আইডি এর আক্সেস তাঁদের হাতে তুলে দেই।সুতরাং বন্ধু এসব ব্যাবহার করতে সাবধান।
আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনার কেমন লাগল কমেন্ট বক্সে জনাতে ভুলবেন না,আপনাদের কমেন্ট পেলে পরের আর্টিকেল লিখতে উৎসাহ জাগবে,আর্টিকেল টি উপকারি মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরধ রইল।
Leave a Reply