আমরা যখন নতুন হিসাবে ব্লগিং জগতে পদার্পণ করি,তখন আমাদের মনের মধ্য একটি আশা থাকে যে আমরাও একদিন সফল ব্লগার হব,এবং বর্তমানে যারা ব্লগিং পেশায় সফল তাঁদের মত রাজকীয় জীবন যাপন করব।কি আমি ঠিক বলছি?কিন্তু আপনি হয়ত সফল হতে পারেননি অথবা এখনও আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সফলতা অর্জন করার জন্য।কিন্তু কিছুতেই কিছু করে উঠতে পারছেন না।কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন কেন আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার সফল হচ্ছে না বা কেন আপনি একজন নতুন ব্লগার হিসাবে সফলতা পাচ্ছেন না?এর একটি কারন আমি শুধু মাত্র এক লাইনে বলছি!কারনটি হল আপনি সারা জীবন স্টাডি করেছেন শুধু পজেটিভ আর্টিকেল পড়ে অথবা ভিডিও দেখে,কখনও নেগেটিভ কোন আর্টিকেল পড়ে দেখেন নি অথবা ভিডিও দেখেও আপনি স্টাডি করেন নি।যেমন আপনি আর্টিকেল পড়ছেন; কিভাবে সফল ব্লগার হব,কিন্তু কখনও পড়ে দেখেন নি কেন আমি ব্লগিং করতে যেয়ে ফেইল করব।ত আজকে আমরা একটি নেগেটিভ আর্টিকেল পড়ব।কেন নেগেটিভ আর্টিকেল বলছি তা হয়ত এই লেখার শিরোনাম দেখে বুঝে ফেলেছেন।তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
১/ আপনি উৎসাহ পাচ্ছেন নাঃ আপনি হয়ত কারও দেখাদেখি (হতে পারে কোন একজন সফল ব্লগার এর ওয়েবসাইট দেখে অথবা কোন সফল ব্লগারকে দেখে অথবা ব্লগ থেকে তাঁর আয় দেখে) ব্লগিং শুরু করার জন্য উতশাহ পেয়েছিলেন।হয়ত ভেবেছিলেন ব্লগিং করা অনেক সহজ!এই চিন্তা থেকেই ব্লগিং জগতে পদার্পণ করেছিলেন।কিন্তু বাস্তবে কাজ করতে যেয়ে দেখলেন ব্লগিং বিষয়টা ততটা সহজ নয় যতটা আপনি ভেবেছিলেন।প্রতিটি স্টেপ আপনাকে অনেক কষ্টের সাথে মোকাবিলা করতে হচ্ছে।আর এই কষ্ট করতে যেয়ে আপনার ব্লগিং করার জন্য যে আগ্রহ ছিল তা আপনি হারিয়ে ফেলছেন।এখন আপনার প্রতি আমার প্রশ্ন হল; আপনি যে কাজ করছেন সে কাজ সম্পর্কে আপনি আগ্রহী না হলে আপনি কীভাবে সেই কাজ থেকে সাক্সেস হওয়ার আশা করতে পারেন?
আপনাকে সর্বদা এখানে ভালবাসার সাথে কাজ করতে হবে,আপনাকে মনে রাখতে হবে যেকোন কাজ করার জন্য সেই কাজের প্রতি ভালবাসা থাকাটা খুবই জরুরি,এখন ব্লগিং করতে যেয়ে আপনার যদি এই কাজের প্রতি ভালবাসা তথা উৎসাহ না আসে তাহলে আপনি একজন নতুন ব্লগার হিসাবে ব্যর্থ হতে পারেন।
২/ সবসময় লাভ সম্পর্কে চিন্তা করাঃ আমি কখন আয় করব?আমি কত আয় করব?আমার আয় অনেক কম!এই কারনগুলোই আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার ধংস করার জন্য যথেষ্ট।আপনি যখন টাকার পিছনে ছুটবেন তখন যেকোনো কাজে আপনার সফলতা পাওয়ার সম্ভবনা প্রায় ০% এর কাছাকাছি,আপনি যখন ই আপনার আশানুরূপ আয় আপনার ব্লগ থেকে পান না, তখনই ব্লগিং ক্যারিয়ার নিয়ে নেগেটিভ আলোচনা শুরু করে দেন।কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে দুনিয়াতে এমন কোন কাজ নাই যে আপনি খুবই অল্প সময়ে প্রচুর আয় করতে পারবেন।তবে একটা নির্দিষ্ট সময় পর সঠিকভাবে কাজ করলে এই সেক্টর থেকে অনেক স্মার্ট আরনিং করা সম্ভব।সুতরাং, আমি কখন আয় করব?আমি কত আয় করব?আমার আয় অনেক কম! এই চিন্তাভাবনা গুলো মন থেকে ঝেরে ফেলে দিতে হবে নতুবা আপনি ব্লগিং ক্যারিয়ারে ব্যর্থ হতে পারেন।
৩/ সৃষ্টিশীলতার অভাবঃ আপনি আর্টিকেল লিখছেন এবং তা আপনার ব্লগে/ওয়েবসাইটে প্রকাশ করছেন নিয়মিত,এভাবে কাজ করতে করতে এটা এক সময় প্রতিদিনের রুটিন হয়ে যায়।কিন্তু দেখা যাচ্ছে আপনার সাইটে আপনি প্রচুর পরিমানে আর্টিকেল পাবলিশ করছেন কিন্তু তা খুবই নিম্নমানের!যার কারনে আপনি আপনার আর্টিকেলের অনুপাতে ট্রাফিক পাচ্ছেন না।আর এই ট্রাফিক না পাওয়ার কারনে আপনি দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছেন।কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন কেন আপনার সাইটে অনেক আর্টিকেল থাকার পরেও আপনি ভিসিটর পাচ্ছেন না।কি খুঁজে পাচ্ছেন না?আমি বলে দিচ্ছি আপনার আর্টিকেল গুনগতমানের হচ্ছে না।আপনি ট্রাফিক এর আশায় অনেক আর্টিকেল প্রতদিন প্রকাশ করছেন কিন্তু তাতে কোন সৃষ্টিশীলতা নাই।আপনার উচিত হবে ২-৪ দিন সময় নিয়ে উন্নতমানের আর্টিকেল লিখা এবং তা আপনার সাইটে প্রকাশ করা।আপনি আজকে থেকেই এই টিপস অনুসরন করে দেখতে পারেন।আশা করি আপনি সফল হবেন।
৪/ আপনার ধৈর্য অনেক কমঃ কখন আমার ব্লগ পোস্ট রাঙ্ক করবে?কখন আমি ভিসিটর পাব?আজকে অনেকদিন হল পোস্ট পাবলিশ করেছি কিন্তু আমার পোস্ট এখনও রাঙ্ক করেনি,আমার সাইট এর পোস্ট সার্চ ইঞ্জিন ইনডেক্স করছে না,ইত্যাদি ইত্যাদি অভিযোগ আপনার।কি ঠিক বলছি ?আপনার ধৈর্য যদি এই রকম হয়ে থাকে তাহলে আমি বলব আপনি ব্লগিং করার উপযুক্ত ব্যাক্তি না।আপনার ভেতর যদি এসব গুনাবলি থেকে থাকে তাহলে এক্ষণই সেটাকে বিদায় করে দিন চিরতরে।নিজের ধৈর্য শক্তি বাড়ান।আমি বলছি আপনি অবশ্যই সফলতার মুখ দেখবেন।
৫/ আপনি সমালোচনা এবং হ্যারেস মন্তব্যকে ভয় পানঃ আপনি সমালোচনা কে অনেক বেশী ভয় পান?কোন কাজ করতে গেলে কি আপনার মনে হয় যে লোকে কি না কি বলে,আমার কাজ দেখে মানুষ হাসে কিনা?আমি যদি (আপনি) সফল না হতে পারি তাহলে কি হবে?সমালোচনা দেখে আতঙ্কিত হওয়া হতে পারে ব্লগার হিসাবে ব্যর্থ হওয়ার কারণ।আপনি সমালোচনা কে এতটাই ভয় পান যে,আপনি যে বিষয় সবচাইতে ভালো জানেন সেই বিষয়ে কোন লেখাও আপনার সাইটে প্রকাশ করতে ভয় পান এবং শেষ পর্যন্ত সমালোচনার ভয়ে সিদ্ধান্ত নেন আপনি আর সেই আর্টিকেল পাবলিশ করবেন না।আপনাকে সর্বদা মনে রাখতে হবে কিছু মানুষ থাকবেই সারাজীবন অন্যদের সমালোচনা করার জন্য।সুতরাং,এসব সমালোচনা দেখে কাজ থামিয়ে দিলে চলবে না।
৬/ আপনি মূল্যবান কন্টেন্ট প্রকাশ করেন নাঃ আপনি নিয়মিত আপনার সাইটে আর্টিকেল পাবলিশ করছেন,কিন্তু আপনি কি এমন কোন আর্টিকেল পাবলিশ করছেন,যা আপনার ভিসিটরকে আকৃষ্ট করছে না?আপনি কি এমন কোন আর্টিকেল লিখছেন যা ইন্টারনেট এর অন্য কোন ওয়েবসাইটে আগেই পাবলিশ হয়েছে এবং তাঁর লেখার গুনগত মান আপনার চাইতে অনেক ভালো?আসিন একটি উধাহরন দেওয়া যাক- ধরেন আপনি বাজারে সবজি কিনতে গেছেন,এবং দেখলেন পাশাপাশি দুই দোকানে একই সবজি আছে কিন্তু একটার চাইতে আরেকটার গুনগত মান অনেক ভালো এবং দুই রকম সবজির দাম একই।এখন আপনার কাছে প্রশ্ন হল আপনি কোন সবজি কিনবেন?যেটির গুনগতমান ভালো নাকি যেটার গুনগত মান খারাপ?এখন সব্জির জায়গায় আপনার আর্টিকেল কে চিন্তা করুন।সুতরাং আমাদের মাথায় রাখতে হবে ভিসিটর কোন ধরনের আর্টিকেল পড়তে পছন্দ করছে সেই রকম আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা বেওং লেখার মান উন্নত করা।আর্টিকেল এর মান ভালো না হলেও আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার ব্যর্থ হতে পারে।
৭/ এসইও কে গুরুত্ব দিচ্ছেন নাঃ আপনি হয়ত উপরের সকল পদ্ধতি অনুসরন করছেন কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেসন (এসইও) কে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।ভাবছেন আমি ত অনেক সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল পাবলিশ করছি আমার আবার কিসের এসইও করতে হবে?আপনি ভুল ধারনা পোষণ করছেন।কোয়ালিটি সম্পূর্ণ আর্টিকেল এসইও এর একটি উপাদান মাত্র।সুতরাং উপরের সকল পদ্ধতি অনুসর করার পাশাপাশি আমাদের কে এসইও এর প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে।নতুবা আমাদের সাইট তথা আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।
এই ছিল ব্লগিং ক্যারিয়ার ব্যর্থ হবার কারন সমূহ।এর বাহিরে আপনার কোন কারন জানা থাকলে অবশ্যই তা কমেন্ট বক্সে জানাবেন।আর্টিকেলটি কেমন হয়েছে তাও জানাবেন।আপনাদের কমেন্ট পেলে পরবর্তী আর্টিকেল লিখতে উৎসাহ পাব।পরবর্তী আর্টিকেল নিয়ে আসব খুব শিগ্রয়।ধন্যবাদ।
Leave a Reply