বিশ্বব্যাপি চলছে করোনা ভাইরাসে মহামারী।ভারতেও এর সংক্রামন বেড়েছে আগের তুলনায়।আর এই কারনেই ভারতে করা হয়েছে লক ডাউন।এই লক ডাউন এর কারনে অনেকেই বাড়ি থেকে অতি প্রয়োজনের সময়ও বের হতে পারছেন না।আর ঠিক সেই সময় ই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন হোয়াটস্অ্যাপ ভিত্তিক একটি গ্রুপ “আপনজন সমন্বয়”।হোয়াটস্অ্যাপে গ্রুপ টির নাম আপনজন সমন্বয়।এই গ্রুপ এর যারা সদস্য তারা অনেকেই সরকারী অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তা,কেউ ছাত্র আবার কেউ তথ্য প্রযুক্তি কর্মী।এদের অনেকে আবার অন্যান্য সংস্থার সাথেও জড়িত।করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় এরা সবাই তাদের নিজ শহর বাসীদের পাশে দাঁড়াতে চায়।আর এই কারনেই তারা সোশ্যাল ওয়েবসাইট এর বিভিন্ন গ্রুপ গুলোতে তাদের সাথে যোগাযোগ করার নাম্বার ছড়িয়ে দিচ্ছেন।ওই গ্রুপ এর সদস্যরা জানান তাদের চেষ্টা অনেকটা সফল।
গত রবিবার তাদের হোয়াটস্অ্যাপে একটা মেসেজ এসেছে যে টা অনেকটা এমন,প্লিজ আমার মাকে বাঁচান,আমি লন্ডনে আছি।করোনা ভাইরাসের সংক্রামন ঠেকাতে লক ডাউন এর ফলে আমি কলকাতায় ফিরতে পারিনি।আমার মা রাজার হাট ফ্লাটে একা আছে।আমার মায়ের জন্য খবার আর অসুধ এর ব্যাবস্থা করে দিবেন প্লিজ।আর শুধু হোয়াটস্অ্যাপেই না তাদের ছড়িয়ে দেওয়া ফোন নাম্বার গুলোতেও এই রকম অনেক অনুরধ আসছে।আজকে সোমবার দুপুরে ওই গ্রুপ এর এক মেম্বার এর কাছে কল আসে,আপ্নারা কি হোম ডেলিভারি করেন?খাবার আর অসুধ শেষ হয়ে গেছে।আমাদের বয়স হয়েছে তাই বাড়ির বাহিরে বের হতে পারছি না।
হোয়াটস্অ্যাপ হোক বা ফোন আপনি যে মাদ্ধমেই তাদের কাছে সাহায্য চান না কেন খবর পেলেই ছুটে যাচ্ছে তারা বিপদে পড়া মানুষদের সাহায্য করতে।বাজার করে দেওয়া,অসুধ কিনে দেওয়া এমনকি টাকার সংকট থাক্লেও তারা খাবার আর অসুধ কিনে দিয়ে আসছে বিপদে পড়া মানুষদেরকে।এবং ওই গ্রুপ এর সদস্যরা এই লক ডাউন এর ভেতরও পালা করে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দান করতে চলে যাচ্ছেন।
ওই গ্রুপ এর সদস্য দেবাশিস রায় জানান,গত শনিবার লন্ডন থেকে এক ভদ্রলোক আমাদের কে মেসেজে জানান তার মা রাজার হাটে একটি ফ্লাটে একা আছেন।তার খাবার এবং ঔষধ প্রয়োজন।এবং তিনি আমাদের সাহায্যের জন্য অনুরধ করেন।আমি এই বার্তা পাওয়ার পর আমাদের রাজার হাটের এক সদস্য কে বিষয়টি জানাই।আমাদের সেই সদস্য যেয়ে দেখেন আসলেও সেই মহিলা(মেসেজ দেওয়া ভদ্রলোকের মা) সত্যিই বাড়িতে একা।তার দেখাশোনা করার জন্য যে পরিচারিকা ছিল সেও লক ডাউন এর কারনে আসতে পারছিল না।আমরা সেই ভদ্র মহিলাকে তার প্রয়োজনীয় সব কিছু কিনে দিয়ে আসি এবং আমাদের সাথে যোগাযোগ করার ফোন নাম্বার দিয়ে আসি যেন আবার কোন সমস্যা বা প্রয়োজন হলে তিনি যেন সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ঠিক একই ভাবে একটি ফোন এসেছিল কসবা রাজডাঙা এলাকা থেকে।ফোন করে এক বয়স্কা মহিলা জিজ্ঞাসা করেন আমরা হোম ডেলিভারি করি কি না?আমাদের ওই এলাকার আপঞ্জন সমন্বয় এর সদস্য জানান তারা আর্থিক ভাবে সচ্ছল কিন্তু করোনা সংক্রামনের কারনে মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছে।তাদের মেয়ে কেনিয়া থেকে ফিরেছে।তাদের একটি নাতনী ও রয়েছে।আর তাদের জামাই বিদেশ থেকে ফিরে এসে হৃদয়পুরে গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছে।লক ডাউন এর কারনে তারা আসতে পারছে না।তাই তারা আমাদের কাছে সাহায্যের আকুতি জানান।সাহায্যের আহ্বান পেয়ে আপজন সমন্বয় এর সদস্য রাহল সরকার তাদের বাড়ি গিয়ে তাদের চাহিদা মাফুক জিনিস পত্র দিয়ে আসেন।
সাহায্য যিনি চেয়েছিলেন তার না মমতা ভৌমিক।মমতা ভৌমিক জানান এই বিপদের দিনে তাদের দ্বারা আমরা অনেক উপক্রিত হয়েছি।আমরা তাদের অতিরিক্ত টাকা দিতে চাইলে তারা তা নিতে অস্বীকার করেন।আজকের দিনে এমনটা ভাবাও যায় না।
আপনাদের কারও কোন সাহায্যের প্রয়োজন হলে নিচের দেওয়া আপনজন সমন্বয় এর সদস্যদের ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেনঃ
- রাহুল সরকার – ৯৮৩১৯৭২৪১২
- দেবাশিস রায় – ৯৮৭৪৯৮৮৬৬৪
- তন্দ্রিল দত্ত – ৮০১৭৭৯৫১১০
- সুমিত মণ্ডল – ৯৮৩০৩৮২২১৬
ছবি ও তথ্য সুত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন পত্রিকা।
Leave a Reply