কপিরাইট আইন কি?
কপিরাইট আইন হল এমন একটি আইন যা কোন লেখা কন্টেন্ট, ছবি, সফটওয়্যার কিংবা যে কোনো জিনিস এর মূল মালিকের স্বত্ব বা অধিকার সংরক্ষন করে যা মূল মালিকের অনুমতি ছাড়া আপনি ব্যক্তিগত বা কমার্শিয়াল ব্যাবহার করতে পারবেন না।যদি মূল মালিকের অনুমতি ছাড়া ব্যাবহার করেন তাহলে আপনি সরাসরি কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন করবেন এবং অপরাধি বলে বিবেচিত হবেন।তথ্য সুত্রঃ ইন্টারনেট।
কপিরাইট আইনের সুবিধা কি কি?
বর্তমান সময়ে আপনার তৈরিকৃত যেকোনো জিনিসের কপিরাইট নিবন্ধন করা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।কপিরাইট এর মাধ্যমে যেকোনো সৃষ্টিশীল কর্মকে এর প্রকৃত মালিককে সুবিধা ভোগ করার অধিকার নিশ্চিত করা হয়।আমরা এখন জানব কেন আমাদের কপিরাইট নিবন্ধন করা উচিত এবং কপিরাইট আইনের সুবিধা সমূহ কি কি?
একজন লেখক সর্বদা তাঁর পাঠকদের নতুন জ্ঞান সম্পর্কিত লেখা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেন।এখন কেউ যদি তাঁর লেখা তাঁর অনুমতি ব্যাতিত কোথাও প্রকাশ করে তাহলে সে অবশ্যই আর নতুন লেখার উৎসাহ পাবেন না।কিন্তু তাঁর লেখা যদি কপিরাইট নিবন্ধিত হয়,তাহলে তাঁর লেখা আর কেউ তাঁর অনুমতি ব্যাতিত প্রকাশ করতে পারে না।ফলে তাঁর লেখা থাকে সর্বদা সংরক্ষিত।এবং সেই লেখক পরবর্তীতে নতুন লেখা প্রকাশ করার জন্য উৎসাহ পায়।
যেকোনো জিনিসের মূল মালিক (যার নামে কপিরাইট করা থাকে) তাঁদের কাজের জন্য সম্মানী পান, যা তাদের কাজে প্রেরণা যোগায়।
লেখক,বিজ্ঞানী,শিল্পি (যারা নতুন কিছু উদ্ভাবন তথা তৈরি করে) তাঁদের সৃষ্টিকর্মের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন।
কপিরাইট আইন লেখক,বিজ্ঞানী,শিল্পি (যারা নতুন কিছু উদ্ভাবন তথা তৈরি করে) তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করে,এবং দেশের সরকারের এটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাদের স্বাথরক্ষা করা।
কপিরাইট আইনের কারনে তাঁদের সৃষ্টি কর্ম তাঁদের অনুমতি ব্যাতিত কেউ চাইলেই পরিবর্তন, পুন:মুদ্রণ বা নিজনামে ছাপাতে না পারে সে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয় ও আইনের দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
কপিরাইট আইনের কারনে সৃজনশীল কাজের বিকাশ ঘটে।
আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন সকল দেশের জন্য আশীর্বাদই বলতে হবে,কেননা আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন এর কারনে এক দেশের সৃষ্টিকর্ম আরেক দেশে নিরাপত্তা পায়।
সাহিত্য ও শিল্পকর্মের আদান প্রদান ও বিনিময়ে অন্যদেশে যেমন তাদের রচনা ও শিল্পকর্মের চাহিদা সৃষ্টি হয়, তেমনি নিজ দেশে অন্যদেশের সাহিত্য ও শিল্পকর্মের আমদানি হয়।
বাংলাদেশে কপিরাইট আইনঃ
“বাংলাদেশ কপিরাইট আইন ২০০০”। এই আইনটি ১৮ জুলাই, ২০০০ সালে পাশ হয় এবং বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়। ইতোপূর্বে বাংলাদেশের “কপিরাইট আইন(১৯৭৪)” তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক জারিকৃত কপিরাইট আইন ১৯৬২ সনের সংশোধিত রূপে কার্যকর ছিল। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের জারিকৃত ১৯৬২ সনের কপিরাইট আইনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এক সংশোধনীর মাধ্যমে “বাংলাদেশ কপিরাইট আইন-১৯৭৪ “ হিসেবে প্রচলন করা হয় এবং ১৯৭৪ হতে ২০০০ সালের ১৭ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর ছিল। তথ্য সুত্রঃ আইন বিষয়ক সহায়তা ও পরামর্শ
বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসঃ
সৃজনশীল ব্যক্তি তাঁর মেধা প্রয়োগ করে যা কিছু সৃজন করেন তাই মেধাসম্পদ। মেধাসম্পদের মালিকানা নিবন্ধনের লক্ষ্যে কপিরাইট অফিস ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কপিরাইট অফিস একটি আধা-বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান। এর কার্যাবলী কপিরাইট আইন-২০০০ (২০০৫ সালে সংশোধিত) ও কপিরাইট বিধিমালা ২০০৬ মোতাবেক পরিচালিত হয়। এ অফিস যে প্রধান ৪টি কাজ করে থাকে তা হল : ১) সৃজশীল মেধাস্বত্বের কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন প্রদান ; ২) আপিল মামলা নিষ্পত্তিতে কপিরাইট বোর্ডকে সহায়তা প্রদান ; ৩) পাইরেসি বন্ধকরণে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা ও ৪) World Intellectual Property Organization, WIPO এর ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন।
কপিরাইট অফিস সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, সংগীতকর্ম, রেকর্ডকর্ম, শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম, বেতার সম্প্রচার, টেলিভিশন সম্প্রচার, কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম ইত্যাদি নিবন্ধন করে থাকে। মেধাসম্পদের আর্থিক অধিকার হস্তান্তরযোগ্য। কপিরাইট নিবন্ধন করা হলে সৃজন কর্মের নৈতিক ও আর্থিক অধিকার অর্থাৎ মালিকানা সংরক্ষণ সহজ হয়। কপিরাইট নিবন্ধন আইনানুযায়ী বাধ্যতামূলক না হলেও, সৃজন কর্মের মালিকানা নিয়ে আইনগত জটিলতা দেখা দিলে ‘কপিরাইট নিবন্ধন সনদ’ প্রমাণপত্র হিসেবে বিজ্ঞ আদালতে ব্যবহৃত হতে পারে। কপিরাইট অফিস বাংলাদেশ সর্বদা আন্তরিক সেবা প্রদান করে থাকে।তথ্য সুত্রঃ আইন বিষয়ক সহায়তা ও পরামর্শ
আপনি চাইলে আপনার যে কোন সৃষ্টিশীল কর্মকে কপিরাইট করে নিতে পাবেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এর মাধ্যমে।কপিরাইট এর নিয়ামাবলি দেখতে পারেন CopyRightOffice এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।আপনার কোন কোন সৃষ্টিকে কপিরাইট নিবন্ধন করতে পারবেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কপিরাইট বিধিমালা প্রযোজ্য হবে তা দেখতে পারবেন এই লিংক ব্যাবহার করে।
Leave a Reply