বিটিআরসি এর নিয়ম অনুসারে একজন ব্যাক্তি ১৫ টি সিম তার এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করতে পারলেও শুধু একটি চক্রর হাতেই রয়েছে টেলিটক এর ৩৪০০ টি সিম কার্ড!এই চক্রটি অবৈধ ভিওআইপি ব্যাবসার কাজে এই ৩৪০০ টি সিম কার্ড ব্যাবহার করে আসছিল।এই চক্রটি এসব সিম দিয়ে অবৈধ টেলিযোগাযোগ সিস্টেম এর মাধ্যমে প্রতিদিন আনুমানিক সাড়ে ছয় লাখ মিনিট আন্তর্জাতিক কল বাংলাদেশে টার্মিনেট করছে।এর ফলে বর্তমান আন্তর্জাতিক টার্মিনেশনের দাম অনুসারে প্রতিদিন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা এবং প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা থেকে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করেছে।
গতকাল বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০) রাজধানীর নিউমার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী থানা এলাকায় এই অভিজান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপি (VOIP) সরঞ্জামসহ চক্রের তিনজনকে আটক করেছে।অভিজান চলাকালীন সময়ে তাদের কাছে থেকে নিম্নলিখিত সামগ্রীগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
- ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত সিম বক্স ডিভাইস-১৯ টি
- জিএস এম অ্যানটেনা-৪১৬টি
- টেলিটক সিম-৩৪০০টি
- মিনি কম্পিউটার-৭টি
- ওয়্যারলেস রাউটার-৩টি
- বাংলালায়ন মডেম ও রাউটার-৫টি
- ল্যাপটপ-৩টি
- ল্যাপটপ কুলার-১টি
- বিভিন্ন চার্জার-১০টি
- ইউএসবি মডেম-৬টি
- পাওয়ার কেব্ল-১২টি
- কনসেল কেব্ল-২৪টি
- থ্রি-প্লাগ-৩টি
- মাল্টিপ্ল্যাগ-৪টি
- মাউস-১টি
- মুঠোফোন-৪টি
অভিযান চলাকালে গ্রেফতার করা হয়েছে, মো. কাজী এম এম মাহামুদ ওরফে ছোটন (৩২), রাকিব হাসান (৩০) ও বাবর উদ্দিন (৩০) নামের এই তিন জনকে।
বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মাহফুজুর রহমান।এসময় তিনি বলেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা এলিফ্যানট রোডের তালহা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ভিওআইপি সরঞ্জামসহ রাকিব হাসান ও বাবর উদ্দিনকে আটক করি।পরে তাদের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা তুরাগের একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ভিওআইপি কন্ট্রোল রুমের সন্ধান পাই এবন সেই সময় এই ব্যাবসার মূল হোতা কাজী এম এম মাহামুদকে আটক করি।
বিটিআরসি এর দেওয়া তথ্য মতে এই চক্র প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মিনিট আন্তর্জাতিক কল বাংলাদেশে টার্মিনেশন করে আসছিল এবং সেই মতে তারা প্রতিদিন বাংলাদেশ সরকারকে প্রায় ৩ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত করছিল এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল।আটক হওয়া ব্যাক্তিরা ভিওআইপি ব্যাবসার পাশাপাশি ভিওআইপি যন্ত্রাংশর ব্যাবসাও করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে।
এসময় র্যাবের পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন,বিটিআরসি এর নিয়ম অনুসারে একটি এনআইডি ব্যাবহার করে ১৫ টি সিম কার্ড নিবন্ধ করা গেলেও এই চক্র কিভাবে ৩৪০০ টি সিম সংগ্রহ করল সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হবে।এবং তারা এই ভিওআইপি কল ব্যাবহার করে কোন অপরাধমূলক কাজে জরিত ছিল কিনা এই বিষয়েও তদন্ত করা হবে।